Wellcome to National Portal
Text size A A A
Color C C C C

সর্ব-শেষ হাল-নাগাদ: ১st সেপ্টেম্বর ২০২১

পরিচিতি

পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন একটি জন গুরুত্বপূর্ণ অধিদপ্তর। দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ পরিদর্শন ও নিরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা জবাবদিহিতা বাধ্যতামূলক সরকারী নিয়ম নীতি অনুসরন, সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার এবং শিক্ষার মানোন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে ১লা অক্টোবর ১৯৮০ সালে এটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। উল্লেখ্য স্বাধীনতা পূর্ব বাংলাদেশে শিক্ষা প্রশাসনের জন্য একটি মাত্র বিভাগ ছিল যার প্রধান ছিলেন ডাইরেক্টর অব পাবলিক ইন্সট্রাকসন। তাঁর প্রধান কাজ ছিল শিক্ষা বিস্তারে সরকারি নীতির প্রবর্তন এবং সরকারি বিদ্যালয় ও কলেজ সমূহের তত্ত্বাবধান করা। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তত্ত্বাবধানের জন্য সরকারের কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থা ছিলনা এবং এ সমস্ত প্রতিষ্ঠান সম্পূর্নরূপে স্থানীয় প্রচেষ্টায় বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত হতো। বস্তুতঃ এ সমস্ত প্রতিষ্ঠানে সরকারি কারিকুলাম অনুসরণ ছাড়া বাকী সমস্ত প্রশাসনিক কাজই প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটির উপর ন্যস্ত ছিল। অল্প কিছু সংখ্যক প্রতিষ্ঠান তখন সময়ে সময়ে বিভিন্ন ধরনের সামান্য মাত্র সরকারি আর্থিক সাহায্য লাভ করত যা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক তাঁদের নিজস্ব সিদ্ধান্ত অনুসারে ব্যয়িত হতো। প্রকৃত পক্ষে, এই ব্যয়ের যথার্থতা নিরূপনের জন্য সরকার কোন গুরুত্ব দিতেন না। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানের আয় ব্যয়ের কোন দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করতেন না। কাজেই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা বিভিন্ন রকম হতো এবং অল্প সংখ্যক প্রতিষ্ঠান ছাড়া শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন ভাতা অনুরূপ সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্ধারিত বেতন ভাতা হতে অনেক কম ছিল। ফলে শিক্ষকগণ আর্থিক অসুবিধাসহ নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে কাজ করতেন। এই অবস্থায় শিক্ষকগণের পক্ষে পড়াশোনার মান উন্নয়নে মনোনিবেশ করা সম্ভব হতোনা। ফলে বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক এবং শিক্ষাগত মান অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিু পর্যায়ে ছিল। এ ছাড়াও স্বাধীনতার পর সঠিক বিবেচনা না করেই অতি উৎসাহের ফলে হঠাৎ করে ব্যক্তি এবং গণ প্রচেষ্টায় অসংখ্য স্কুল, কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু অল্প কিছুদিন পরেই এসব প্রতিষ্ঠান স্থাপনকারীদের উৎসাহে ভাটা পড়ে এবং তাঁরা স্কুল পরিচালনার দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হন। ফলে বাহ্যিক ও আর্থিক সহায়তা হতে বঞ্চিত হয়ে শিক্ষক কর্মচারীগণ ছাত্রবেতন এবং অন্যান্য ব্যবস্থায় অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে, আর কিছু না হোক, নিজেদের চাকুরী বজায় রাখার স্বার্থে কোন রকমে প্রতিষ্ঠান চালাতে থাকে। ক্রমেই এরূপ অবস্থা দাঁড়ায় যে, সরকারি সাহায্য না পেলে অধিকাংশ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-যাদের উপর দেশের শতকরা প্রায় পঁচানব্বই ভাগ শিক্ষা ব্যবস্থা নির্ভরশীল তা বন্ধ হয়ে যাবে।           

এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে কাংখিত সফলতা অর্জনের জন্য ১৯৭৯ সালে তদানীন্তন বেসরকারি বিমান চলাচল এবং পর্যটন মন্ত্রী জনাব কাজী আনওয়ারুল হকের সভাপতিত্বে, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রশাসন ব্যবস্থার উন্নতি  এবং শিক্ষকগণের আর্থিক সুবিধা প্রদানের উদ্দেশ্যে সুপারিশ রাখার জন্য, একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করে। সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সব রকম বৈষম্য লাঘব করার উদ্দেশ্যে এই কমিটি ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কতগুলো বিশেষ শর্তাধীনে সরকারি এবং বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক কর্মচারীদের বেতন স্কেল সমপর্যায়ে আনার জন্য সুপারিশ পেশ করে। এই সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ১ জানুয়ারী ১৯৮০ হতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অনুরূপ পে-স্কেল চালু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এর ফলে, সরকারের শিক্ষা ব্যয় হঠাৎ করে অনেকগুন বেড়ে যায়। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও এর শিক্ষক-কর্মচারীদের বিপরীতে বরাদ্দকৃত এ বিপুল অংকের টাকা সরকার তথা শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রণীত বিধি-বিধান ও নীতিমালা অনুযায়ী ব্যয় করা হচ্ছে কিনা এবং শিক্ষা ক্ষেত্রে কাংক্ষিত সফলতা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে সুষ্ঠু তদারকির জন্য মন্ত্রণালয়ের  অধীনে স্বতন্ত্র কোন প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনা ছিল না। এ কারণে শিক্ষা ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, বাধ্যতামূলকভাবে সরকারি নিয়ম-নীতি অনুসরণ, সরকারি অর্থের সদ্ব্যবহার এবং শিক্ষার মান উন্নয়ন নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে একটি স্বতন্ত্র প্রশাসনিক সংস্থা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয় ।

বিষয়টির দিকে দৃষ্টি রেখে কাজী আনওয়ারুল হক কমিটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গুলোর জন্য “পরিদর্শন এবং নিয়ন্ত্রণ পরিদপ্তর” নামে একটি পৃথক পরিদপ্তর সৃষ্টির জন্য সুপারিশ করেন। উক্ত সুপারিশের ভিত্তিতে এর নাম করণে কিছুটা পরিবর্তন করে ব্রিটেনের "হার ম্যাজিষ্ট্রিজ ইন্সপেক্টরেট অব এডুকেশন" -এর অনুকরণে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ০১/১০/'৮০ ইং তারিখ হতে "পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর" নামে একটি পৃথক অধিদপ্তর সৃষ্টি করা হয় (শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স¥ারক নং-প্রশাঃ ৪এ-৪২/৮০/৬১৭-শিক্ষা, তারিখঃ ৩০/৯/৮০ইং)।